এই লড়াইয়ে জয়ী হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নাই: মির্জা ফখরুল

 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে যে লড়াই শুরু হয়েছে জয়ী হওয়া ছাড়া বিকল্প নাই। তিনি বলেন, শত বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে মানুষ একাত্মতা ঘোষণা করছে এই মুক্তির আন্দোলনের সাথে। আমরা জীবনপণ লড়াই করছি। আমাদের সামনে বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। এই লড়াইয়ে, এই সংগ্রামে আমাদের জয়ী হতে হবে-কোনো বিকল্প নাই। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, সবাই ঐক্যবদ্ধ হন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে জীবন বাজী রেখে এই সংগ্রামের নেমে পড়েন।

রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বিনা কারণে তাকে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। হত্যা করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। তারপরেও দেখেন মানুষের স্বাধীনতার জন্যে, মুক্তির জন্যে কতটা আবেগ, কতটা আকুতি। কেউ থেমে থাকছে না।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিএনপির উদ্যোগে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘজীবন ও তার সঠিক নেতৃত্বের দিকে গোটা বাংলাদেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। আমরা যেটা উপলব্ধি করেছি যে বাংলাদেশের রাজনীতিকে পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু রাজনীতিতে পরিণত করা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়ার যে হীন চক্রান্ত, সেই চক্রান্ত থেকে মুক্তি পাওয়ার আমাদের জনগণের মধ্যে যে একটা আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি আমাদের সাতটি বিভাগীয় সমাবেশের মধ্য দিয়ে মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, যে আবেগ, মানুষের কষ্ট করে সামনে এগিয়ে আসা, মানুষের যে প্রাণ দেয়া- এই ঘটনাগুলো থেকে বুঝা যায় যে, এই নেতা (তারেক রহমান) আমাদের জন্য কতটা অপরিহার্য।

চলমান আন্দোলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ভোলা, যশোরে দলের সাতজন নেতা-কর্মীর প্রাণ হারানোর প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্যে। আজকে সেই মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের তারেক রহমান। আমরা সবাই জানি কি নিদারুণ যন্ত্রণা, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ১/১১ তে তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, আমরা জানি তাকে অন্যায়ভাবে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করার পর কারাগারে রেখে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে পঙ্গু করে ফেলা ও হত্যা করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত তিনি বেঁচে আছেন, তিনি আমাদের অনুপ্রাণিত করছেন প্রতি মুহূর্তে।

তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এ দিনটি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নেতা দীর্ঘ জীবন, সুস্বাস্থ্য এবং একইসাথে তিনি দেশে ফিরে এসে নেতৃত্ব দিতে পারেন এজন্য আমরা দোয়া চাই, এই দোয়া আমরা চাইব, তার নেতৃত্বে আমরা যেন বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন করতে পারি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের সোনারামপুর ইউনিয়নে আমাদের ছাত্র দলের যে নেতা প্রাণ হারিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তার প্রতি আমরা আজকে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। নয়ন মিয়া তার নাম। গতকাল তাকে আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সরাসরি গুলিতে তার পেটের সমস্ত নাড়ি-ভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে। আমি ডা. রফিকুল ইসলামের সাথে গতকাল কথা বললাম। খুব কাছে থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে।

নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), আব্দুল কুদ্দুস, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, আবদুল সামাদ আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এম এ মালেক, তাইফুল ইসলাম টিপু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, ইয়াসীন আলী, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *