চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে দেশ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে জ্বালানী তেলের মজুদ

সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটে দেশের অর্থনীতি ইতোমধ্যেই ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। পর্যাপ্ত রিজার্ভের অভাবে জ্বালানী তেল আমদানি করতে না পারায় পেট্রোলসহ অন্যান্য জ্বালানীর মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে খবর বের হয়েছে দেশে পেট্রোলের মজুদ আছে মাত্র ১৩ দিনের এবং অকটেন আছে ১১ দিনের।

সেন্ট্রাল রিজার্ভে টান পড়ায় জ্বালানী আমদানি করার সামর্থ্য ক্রমেই হারিয়ে ফেলছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ রয়েছে তাতে সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন মাসের আমদানি করা সম্ভব। এদিকে ডলারের অভাবে অনেক ব্যাংক ব্যবসায়ীদের আমদানির এলসি খুলতে অপারগতা প্রকাশ করছে। অনেক ব্যাংক ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য এখন আর এলসি খুলছে না।

অপর দিকে প্রতি ডলারে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) খোলাবাজারে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। যা অতীতে কখনো ঘটেনি। এই দাম বাড়ার ফলে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১১২ টায়। মঙ্গলবার ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে ডলার। অথচ, সোমবার খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৭ টাকা। একদিনের ব্যবধানে প্রতি ডলারে দাম বেড়েছে ৫ টাকা করে।

কিন্তু জ্বালানী তেলের মজুদ এবং অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের তরফ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিকে কিছুই অবহিত করা হচ্ছে না। মানুষকে অন্ধকারে রেখে শেখ হাসিনার সরকার নানা ইস্যু দিয়ে সঙ্কটের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা জালিয়ে যাচ্ছে।

পেট্রোলের মজুদ যে কমে তলানিতে ঠেকেছে সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে সরকারের নানা তৎপরতায়। পর্যাপ্ত রিজার্ভের অভাবে জ্বালানী আমদানি করতে না পারায় তরল জ্বালানী নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গুলো ইতোমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমে গিয়েছে। শেখ হাসিনার মন্ত্রীদের ঘোষণা অনুযায়ী জাদুঘরে পাঠানো লোডশেডিং আবার ফেরত এসেছে। বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে শিল্প ও কৃষি উৎপাদনে বড় ধাক্কা লেগেছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানী নিয়ে সরকারের অহংকারের বেলুন ফুটো হয়ে গেছে। বের হয়ে আসছে ইনডেমনিটি দিয়ে বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের নানা চিত্র। বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র অনুযায়ী গত ১১ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা ফাও নিয়েছে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীরা। যা দিয়ে অন্তত ৩টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব ছিল। আর এই টাকা নিয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here